Featured

এক নজরে কোরআন....

 এক নজরে কোরআন....




এক নজরে কোরআন - কোরআন মুসলমানদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ, যা আল্লাহর (সুবহানাহু ওয়া তাআলা) কথার সরাসরি প্রকাশ। এটি নবী মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর উপর ২৩ বছরের মধ্যে বিভিন্ন সময় নাজিল হয়েছিল। কোরআনের মূল উদ্দেশ্য মানুষকে সৎপথে পরিচালিত করা, আল্লাহর একত্বের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা এবং মানুষের জীবনকে সঠিকভাবে পরিচালনা করা।

১. নাজিলের প্রক্রিয়া:

কোরআন প্রথম নাজিল হয় ৬১০ খ্রিস্টাব্দে, যখন নবী মুহাম্মদ (সা.) মক্কার হেরা গুহায় ধ্যানে বসে ছিলেন। সেখানে আঞ্জেল জিবরিল (আ.) তাঁকে প্রথম "ইকরা" (পড়ো) বলে আদেশ দেন, যা কোরআনের প্রথম আয়াত। এরপর ২৩ বছরের মধ্যে বিভিন্ন সময়ে কোরআনের আয়াতগুলো নাজিল হতে থাকে, কিছু মক্কায়, কিছু মদিনায়।

২. কোরআনের বার্তা:

কোরআন মূলত তিনটি প্রধান বিষয় তুলে ধরেছে:

  • তাওহিদ (আল্লাহর একত্ব): আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই, তাঁর ছাড়া কোন সৃষ্টির উপাস্য হতে পারে না।

  • নবুওয়ত (নবীদের আগমন): মহানবী মুহাম্মদ (সা.) আল্লাহর সর্বশেষ রাসূল। পূর্ববর্তী নবীরা যেমন: আদম, নুহ, ইব্রাহিম, মুসা, ঈসা (আ.)—তাঁরাও এক আল্লাহর বার্তা নিয়ে এসেছিলেন।

  • আখিরাত (পুনরুত্থান): বিশ্বাস করা যে, সকল মানুষের মৃত্যুর পর কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাঁদের কাজের হিসাব নেবেন এবং সঠিক কাজের জন্য জান্নাত বা খারাপ কাজের জন্য জাহান্নাম দেওয়া হবে।

৩. কোরআনের মূল বৈশিষ্ট্য:

  • কিতাবুল হিদায়াহ: কোরআন মানবতার জন্য সঠিক পথের নির্দেশিকা।

  • অলংকারিক ভাষা: কোরআন এর ভাষা অত্যন্ত সুন্দর, শক্তিশালী এবং চিরকালীন, যা যুগে যুগে মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছে।

  • সামাজিক ন্যায়: কোরআন সামাজিক ন্যায় প্রতিষ্ঠার কথা বলে। এটি দান, সাহায্য, দয়া, সহানুভূতি, ন্যায় ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করতে বলে।

৪. কোরআনের সংরক্ষণ:

নবী মুহাম্মদ (সা.) এর জীবদ্দশায় কোরআনটি মুখস্ত করা এবং লিখে সংরক্ষণ করা হয়। তাঁর সাহাবীরা কোরআন memorized করেছিলেন এবং নবী (সা.) এর মৃত্যুর পর, খলিফা উসমান (রহ.) একাধিক কপি তৈরি করে এটি সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দেন। এইভাবে কোরআনকে তার আসল আকারে সংরক্ষণ করা হয়।

৫. কোরআনের আয়াতের সংখ্যা:

কোরআনে মোট ১১৪টি সূরা রয়েছে, যার মধ্যে কিছু ছোট, কিছু বড়। প্রতিটি সূরা বিভিন্ন আয়াতে বিভক্ত। কোরআন ৬,২৩৬টি আয়াতে বিভক্ত, যদিও বিভিন্ন মুফাসসিররা আয়াতের সংখ্যা নিয়ে কিছু ভিন্নমত পোষণ করেছেন।

৬. কোরআনের প্রভাব:

কোরআন শুধু ধর্মীয় অনুশাসনই দেয় না, এটি সমাজব্যবস্থা, আইন, অর্থনীতি, সংস্কৃতি, পরিবার এবং মানবাধিকারের ক্ষেত্রেও দিকনির্দেশনা প্রদান করে। কোরআন মুসলিম জাতির জীবনের এক অপরিহার্য অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে।


কোরআন একটি জীবন্ত চ্যালেঞ্জ, যা প্রতি মুহূর্তে মানুষের জন্য একটি দিকনির্দেশনা হয়ে রয়েছে। এটি শুধু পাঠ করার জন্য নয়, বরং জীবনে বাস্তবায়ন করার জন্য। যেভাবে আল্লাহ বলেছেন, “এই কিতাবটি এমন এক পথপ্রদর্শক যা যে কোন সন্দেহ থেকে মুক্ত এবং যারা আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে তাদের জন্য পথ দেখায়।” (সুরা বাকারা, আয়াত ২)

এটাই কোরআনের এক নজরে গল্প।




Comments

Popular Posts